প্রধান দুই মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট

ঈদুল আজহায় নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে মানুষ। দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি চলমান থাকলেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রধান সড়কগুলো যানবাহনে পরিপূর্ণ। সবচেয়ে বেশি জট লেগেছে রাজধানীতে থেকে বের হওয়ার প্রধান দুটি মহাসড়কে।
পাটুরিয়া ফেরিঘাট ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকেই ঈদে ঘরমুখো যাত্রী আর যানবাহনের উপচেপড়া ভিড় লেগেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ির ভেতরেই চলে যাচ্ছে তাদের সময়। কোনোভাবেই যানজট সামাল দিত পারছে না ঘাট কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রশাসনের সদস্যরা। যানযট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ। তবে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে বলে জানান বরঙ্গাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি।
ফেরি কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত তিন ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এছাড়া যানবাহনের অস্বাভাবিক চাপের কারণে বৃহস্পতিবার মধ্য রাত থেকে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
ফেরি ঘাট সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পাটুরিয়া ফেরিঘাট তথা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। সন্ধ্যার পর থেকে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় ঘরমুখো মানুষ ও যাত্রীবাহী বাসের চাপ বেড়ে যায়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির চাপও বাড়তে থাকে। ট্রাফিক পুলিশ এবং ঘাট কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে রাত ২টার পর থেকে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় ফেরিতে ওঠতে যানবাহনের বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ফেরিতে আগে ওঠার প্রতিযোগিতায় যাওয়ায় ঘাট এলাকায় চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এতে ফেরিঘাট এলাকায় রাস্তা পন্টুন পুরো ডেড লক হয়ে পরে। এ কারণে বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটা থেকে ফেরিতে যানবাহন লোড ও আনলোড বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে যায়।
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের মির্জাপুরের গোড়াই থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত শুক্রবার ভোর থেকে ৬৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়। দুপুরের দিকে যানজটের তীব্রতা কমে বঙ্গবন্ধুসেতু থেকে মির্জাপুর পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার থেমে থেমে চলছে গাড়ী। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ঈদে ঘরমুখো মানুষ। মহাসড়কে পশুবাহি ট্রাক ও যাত্রীবাহি বাসের সংখ্যা কয়েকগুন বেড়ে গেছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজা ৮৯ মিটিন বন্ধ থাকা এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ৪ লেনের গাড়ী এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধুসেতু পর্যন্ত দুই লেনে প্রবেশ করার কারনেই এ মহাসড়কে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে চরম ভোগান্তি পরেছে যাত্রী সাধারন ও পরিবহন চালকরা।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখো মানুষের সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মির্জাপুরের পাকুল্যা, নাটিয়াপাড়া, করটিয়া, তারুটিয়া, রাবনা পাইপাস ও এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, মহাসড়কে গত চব্বিশ ঘন্টায় ৪৮ হাজার ৩শ ২১টি গাড়ি আসা যাওয়া করেছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর চাপ কমানোর জন্য টোল প্লাজা ৮৯ মিনিট বন্ধ রাখা হয়। এ কারনে এ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে পুলিশ সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছে। আগামী দুই তিন ঘন্টার মধ্যে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।