মিয়ানমারের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ বিবৃতি দেবে। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে তিনি এ কথা জানিয়েছেন।
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে। অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) বেসামরিক সরকার উৎখাত করে দেশটির ক্ষমতা দখল করেছে সেনাবাহিনী।
প্রতিবেশী মিয়ানমারের সবশেষ এই ঘটনাবলির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মিয়ানমারের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।
এদিকে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আরেক প্রতিবেশী ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের আটক করে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। মিয়ানমারের সামরিক টেলিভিশন বলেছে, সেনাবাহিনী এক বছরের জন্য দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে।
প্রতিষ্ঠিত অনলাইন নিউজ সার্ভিস, ইরাওয়াদ্দি জানিয়েছে যে দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতা স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি এবং দেশটির রাষ্ট্রপতি উইন মিন্টকে সোমবার ভোরে আটক করা হয়েছে। নিউজ সার্ভিসটি সু চির ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) মুখপাত্র মায়ো নিন্টের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, আইন প্রণেতা এবং আঞ্চলিক মন্ত্রিসভার সদস্যদেরও হেফাজতে নেয়া হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, সোমবার ভোরে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান হচ্ছে এবং স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকে গৃহবন্দী করে আটক করা হয়েছে, রাজধানীর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
নেপিডোতে ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং সু চির ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টিতে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যান্য দেশ এই খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ নিন্দা জানিয়েছে। নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘও। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিসহ তার দলের অন্য নেতাদের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি সেনাবাহিনীর হাতে আইনসভা, নির্বাহী ও বিচারিক ক্ষমতা স্থানান্তরের ঘোষণার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের শিকার হয়ে বছর কয়েক আগে লাখো রোহিঙ্গা বাংলাদেশ আশ্রয় নেয়। এই রোহিঙ্গা নিজ দেশে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারের সঙ্গে দেনদরবার করে আসছিল বাংলাদেশ। এখনে দেশটিতে ফের সামরিক জান্তা ক্ষমতা দখলে নিল।