বুধবার, ৭ জুন ২০২৩ | ২৪শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

আজ শুরু হলো ভাষার মাস

আজ ১ ফেব্রুয়ারি। বছরঘুরে বাঙালি জাতির জীবনে আবারও ফিরে এলো রক্তস্নাত এই মাস। ভাষা আন্দোলনের উত্তাল স্মৃতিমাখা এ মাস এলেই বিদ্যুৎচমকের মতো মনে ভিড় জমায় সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর—এসব ভাষা শহিদদের নাম। সাতচল্লিশে দেশভাগের পরেই যখন বাঙালির ভাষার ওপর আঘাত এলো, তখন বুকের রক্ত ঢেলে লেখা হলো এক নতুন ইতিহাস। ভাষা আন্দোলনের সেই লড়াই থেকে সঞ্চিত শক্তিই পরবর্তীকালে যুগিয়েছে গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণা।

‘আমার ভাই এর রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’- রক্তে রাঙ্গানো ফেব্রুয়ারি মাস, ভাষা আন্দোলনের মাস শুরু হচ্ছে আজ সোমবার। এ দিন থেকে ধ্বনিত হবে সেই অমর সংগীতের অমিয় বাণী। বাঙ্গালী জাতি পুরো মাস জুড়ে ভালোবাসা জানাবে ভাষা শহীদদের প্রতি।

ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ।

১৯৫২ সালের এ মাসেই রক্তঝরা ভাষা আন্দোলন তীব্রতর রূপ ধারণ করেছিল। মাতৃভাষা বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার সংগঠিত দাবি ও আন্দোলনকে বানচাল করার জন্য একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম গুলী চালানো হয়েছিল। তাতে কয়েকটি অমূল্য প্রাণ সালাম রফিক, জব্বার, শফিউর, বরকত মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তাই গভীর বেদনায়, মহিমায় ও পবিত্র আবেগে ওই দিনটিকে ইতিহাসের পাতায় রক্তের অক্ষরে লেখা হয়ে যায়। বিশেষ সেই তারিখে শহীদদের আত্মদান একটি কিংবদন্তী রূপ লাভ করে। আজ তাই একুশে ফেব্রুয়ারি একটি অভিধা, একটি ধ্বনি, একটি প্রতীকে পরিণত হয়েছে। পরিণত হয়েছে জাতির জাগরণের প্রতীকে।

বস্তুত ফেব্রুয়ারি মাস এক দিকে শোকাবহ হলেও অন্য দিকে আছে এর গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। কারণ পৃথিবীর একমাত্র জাতি বাঙালি, যারা নিজেদের ভাষার জন্য এ মাসে জীবন দিয়েছিল। করোনা মহামারীর কারণে এবারের একুশের অনুষ্ঠানমালায় আনা হয়েছে কিছুটা পরিবর্তন। অন্যদিকে একুশের মাসের সবচেয়ে বড় কর্মযজ্ঞ মাস ব্যাপি বইমেলা এবার ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে না। এবার মেলা হবে ১৮ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত।

সংবাদটি আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন