১৭-২৩ মে আবার ‘লকডাউন’ প্রজ্ঞাপন রোববার

দেশে করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউন আরও এক সপ্তাহের জন্য বাড়ছে। ঈদ পরবর্তী মানুষের অবাধ চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ চলমান লকডাউন আরেক দফা বাড়ানো হচ্ছে। রোববার (১৬ মে) এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে সরকার।
আজ শনিবার (১৫ মে) জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, এখন যেমনভাবে বিধিনিষেধ চলছে, তেমন করে আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে রোববার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তারপর প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে।
এর আগে, মঙ্গলবার (১১ মে) বিকেলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন চলমান ‘লকডাউন’ ঈদের পরে আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এটা ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। সংক্রমণ এড়াতে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত,সারাদেশে গত ৫ এপ্রিল থেকে সাতদিনের লকডাউন শুরু হয়। লকডাউন শেষে দুদিন বিরতির পর গত ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর লকডাউন শুরু হয়। তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় লকডাউনের মেয়াদ ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় ২৮ এপ্রিল আবারো লকডাউন বাড়িয়ে করা হয় ৫ মে পর্যন্ত। এরপর গত ৩ মে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আবারও লকডাউন বাড়িয়ে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
জনপ্রশাস মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারি ছুটিতে কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়। শহর ও জেলার ভেতরে ছাড়া গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েও তেমন লাভ হয়নি। এতকিছুর মধ্যেও ঈদুল ফিতরে মানুষ গ্রামের বাড়ি গেছেন। ঈদের পর একইভাবে ফিরে আসলে সংক্রমণ বাড়তে পারে।
জানা গেছে, ঈদে যেসব মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে গেছে, তারা কীভাবে ফিরবে, বিধিনিষেধে কী কী থাকবে, সেই বিষয়গুলো আলোচনার ভিত্তিতে ঠিক হতে পারে। শর্ত সাপেক্ষ সীমিত সময়ের জন্য গণপরিবহন চলবে কিনা, নাকি আগের মতই বন্ধ থাকবে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে, লকডাউন বাড়ানো হলেও দূরপাল্লার গণপরিবহন চালুর জন্য মালিক সমিতি ও শ্রমিকরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন। তারা দাবি আদায়ে মাঠ পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করছেন। বর্তমান লকডাউন তথা বিধিনিষেধে একই জেলার মধ্যে গণপরিবহন চলতে পারছে। তবে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় গণপরিবহন বন্ধ আছে। এছাড়া যাত্রীবাহী নৌযান ও ট্রেনও আগের মতো বন্ধ আছে। তবে গত ২৫ এপ্রিল থেকে দোকান ও শপিং মল খুলে দেওয়া হয়েছে। খোলা আছে ব্যাংকও। এছাড়া জরুরি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত অফিসগুলোও খোলা রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য,করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের চলমান বিধিনিষেধ রোববার (১৬) মে শেষ হচ্ছে। চলতি বছর প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। পরে তা আরও দুদিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। সেটি পরে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। এরপর আবার তা ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়, যা আবার বাড়িয়ে ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল।