বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩ | ১৫ই চৈত্র ১৪২৯

তিনটি  ঘরোয়া  উপায়ে মানসিক স্বাস্থ্যে’র উন্নতি

অনন্যা চৈতী

মানসিক অসুস্থতা  একজন মানুষের সামগ্রকি মনস্তাত্বকি অসুস্থতাকে বুঝায়। এটি তার চিন্তাভাবনা, আচরণ, নানাবধি সমস্যা পরচিালনা করা, মানসিক চাপ মোকাবেলা এবং জীবনের নানা অসুবিধা  থেকে পুনরুদ্ধার করার পথে প্রভাব ফেলে। দৃঢ় মানসিক স্বাস্থ্য থাকার অর্থ এই  নয় যে একজন মানুষ কখনই হতাশ হন না; বরং এর অর্থ হলো প্রতিকূল জীবন তার দিকে যা ছুঁড়ে দেয় তা থেকে সে দ্রুত ফিরে আসতে পারেন। নির্দিষ্ট মানসিক সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য  চমৎকার সহজ ৩টি এবং আর্শ্চযজনক ঘরোয়া উপায় রয়েছ যার মাধ্যমে একজন মানুষ তার নিজের মানসিক স্বাস্থ্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে  পারেন।

রান্নাঘরের ছোট্ট বাগান:  দীর্ঘ দিনের গবষেণায় দেখা গেছে, গাছের  যত্ন নেয়ার ওপর মনোনিবেশ করা, বীজ বপন করা, পানি দেয়া মানসিক চাপ দূরে সরিয়ে  মনে শান্ত প্রভাব আনতে পার।  জার্নাল অব ফিজিওলজিক্যাল অ্যান থ্রপোলজিতে প্রকাশতি একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, রান্নাঘরে লাগানো গাছগুলো  উচ্চ রক্তচাপের মতো শারীরিক  অসুস্থতাকে হ্রাস করতে পারে এবং মানসিক প্রশান্তি এনে দিতে পারে। এমনকি মাটিও মানসিক স্বাস্থ্যের  উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ এটি মস্তিষ্কে প্রতিষেধক হিসাবে একইভাবে প্রতিক্রিয়া  সৃষ্টি  করে। মাইকোব্যাক্টরিয়াম ভ্যাকা নামক মাটিতে পাওয়া একটি ব্যাক্টিরিয়া যা মস্তিষ্কে  সুখী রাসায়নকি সেরোটোনিন উৎপাদন করতে  এবং  ভাল বোধ করতে সহায়তা  করে। যেহেতু  সাধারণ গাছগুলি বাড়তে ও ফল ধরতে  দুই  থেকে তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়, সে  তুলনায়  তুলসী, মটর, পার্সলে, পালংশাক, লেটুসের  মতো ছোট গাছ রান্নাঘরে বাগান করার জন্য অতুলনীয়।

রান্নার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো:   জার্নাল  অব  পজিটিভ  সাইকোলজিতে প্রকাশতি আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে , যারা রান্না এবং বেকিং-এর  মত সৃজনশীল কাজগুলোতে তাদের সময় এবং শক্তি ব্যয় করে; দৈনন্দিন জীবনে তারা সুখী এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।  ‘ রান্না থেরাপি’  এখন বিভিন্ন আচরণগত পরিস্থিতি এবং মানসকি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যা, যেমন –  উদ্বেগ, হতাশা, ক্ষুধা মন্দা ইত্যাদির চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে । রান্না একজন  মানুষকে  সৃজনশীলতা অনুশীলন এবং ধৈর্য্য ধারণে সহায়তা করে, যা  মানসিক  স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। যখন অন্যের  জন্য রান্না করা হয় তখন এটি একজন মানুষের মধ্যে আত্মসম্মানবোধ তৈরি করে এবং সম্প্রদায়ের একটি ধারণা  তৈরি করতে সহায়তা  করে। নিজে  রান্না করার অন্যতম সুবিধা হলো, এটি  মনকে সুসংহত করে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ তার  মানসিক সুস্থতা ফিরিয়ে আনে।

গোছালো বনাম অগোছালো:  ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-এর  পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, একটি অগোছালো  ঘরে  থাকা   মায়েদের  মধ্যে  “ কর্টসিল ”  নামক স্ট্রেস হরমোন উচ্চ মাত্রায় বেড়ে গিয়েছিল। যখন প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো অগোছালো হয়ে থাকে তখন সেটা মানুষের  মনকে উদ্বগ্নি এবং বিক্ষিপ্ত করে তোলে।  গোছানোর কাজটি শুরু করা যেতে পারে রান্নাঘর দিয়ে কারন এটিই একটি বাড়ির সব থেকে অগোছালো জায়গা। ওসডি বা অবসেসিভ-বাধ্যতামূলক রোগ আক্রান্ত ব্যক্তিরা অগোছালো জায়গা গোছানোর মাধ্যমে সাময়কি স্বস্তি পেতে পারে। এই পদ্ধতি একজন মানুষের  দ্রুত সিদ্ধান্ত  গ্রহণ এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতাকেও বাড়িয়ে দেয়, যা তার মনে সাফল্যের অনুভূতি এনে দেয় ।

তথ্য সূত্রঃ টাইমস অব ইন্ডিয়া

 

সংবাদটি আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন