মাস্ক জালিয়াতি: সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী শারমিন গ্রেপ্তার

জাগরণ বার্তা ডেস্ক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়-বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নকল মাস্ক সরবরাহের মামলায় অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শারমিন জাহানকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে রমনা জোনের ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
ডিবির রমনা বিভাগের ডিসি এইচ এম আজিমুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় প্রতারণার মামলা করেন। মামলায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহানকে আসামি করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজে স্নাতকোত্তর শারমিন ২০০২ সালে ছাত্রলীগের বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের গত কমিটিতে তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন। বর্তমান কমিটিতে কোনো পদ না পেলেও দলের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছেন।
বিএসএমএমইউ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নকল ‘এন৯৫’ মাস্ক সরবরাহ করে শারমিন জাহানের মালিকানাধীন অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল নামে প্রতিষ্ঠান।
শাহবাগ থানায় প্রতারণার মামলায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহানকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া, বিএসএমএমইউয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মজুমদারও মামলার বিষয়ে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়ার নির্দেশে বৃহস্পতিবার রাতে শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন প্রক্টর মোজাফফর আহমেদ।
জানাগেছে, বিএসএমএমইউয়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া শুরু হয় ৪ জুলাই। প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাচে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের দেয়া এন-৯৫ মাস্ক নিয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে গত শনিবার তৃতীয় ব্যাচেই বাধে বিপত্তি। অভিযোগ ওঠে তাদের দেয়া হয় নকল এন-৯৫ মাস্ক। নকল মাস্কগুলোতে লেখা ভুল, লট নম্বর নেই। আসল এন-৯৫ মাস্কের সঙ্গে নকল মাস্কও সরবরাহ করে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে প্রায় ৮০-৯৫ লাখ টাকার মাস্ক নিয়েছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় ‘অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল’কে কারণ দর্শানোর নোটিশও দিয়েছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয় তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের কারণ দর্শানোর নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার তার উত্তর দিয়েছেন অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার শারমিন জাহান। তারা বিষয়টিকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উলেখ করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, নকল মাস্ক সরবরাহ করার কোনো ইচ্ছা তাদের ছিল না। তাদের কাছে যেখানে প্যাকেটজাত অবস্থায় মাস্কগুলো এসেছে সেভাবেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছিল। তবে অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তারা সেসব মাস্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছেন, কারণ দর্শানো নোটিশে তারা যা বলছেন তা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টি তদন্তের জন্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তিন সদস্যবিশিষ্ট যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তারা যাতে এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই আমরা সিদ্ধান্ত নেব।